শিরোনাম

বিচার বিভাগকে পিষ্ট করেছেন দুই মন্ত্রী : প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুই মন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকেই ছোট করেননি গোটা বিচার বিভাগকে পায়ের নিচে পৃষ্ট করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। রোববার খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে আপিল বিভাগে দুই মন্ত্রীর হাজিরার দিন ধার্য থাকায় মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হক সকালে আদালতে হাজির হন। পরে অবমাননার অভিযোগের বিষয়ে শুনানি আগামী ২৭ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

শুনানিতে দুই মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, যতই ক্ষমতাবান হোন না কেন, এই আদালত যেকোনো আদেশ দিতে দ্বিধাবোধ করবেন না। এই কোর্ট সংবিধানের অঙ্গ। সরকারের অঙ্গ নয়। তাই সংবিধান ও আদালতের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে।

বিচারপতি ওয়াহহহাব মিয়া বলেন, প্রধান বিচারপতি চাইলেও তার পক্ষে একা রায় দেওয়া সম্ভব না। প্রধান বিচারপতিকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে কিনলেও অন্য চার বিচারপতিকে কেনা সম্ভব নয়। প্রধান বিচারপতি একা কোনো রায় দেন না। প্রধান বিচারপতি ও আমরা জনকণ্ঠের রায়ে বলে দিয়েছি।

প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করে বলেন, মন্ত্রীকে প্রশ্ন করি। আপনি কাশেমের রায় পড়েছেন। কিন্তু ওনারা জনকণ্ঠের রায় পড়েছেন? কাশেমের রায়কে প্রভাবিত করতে মন্তব্য করেছেন আমার সন্দেহ হয়। প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগকে স্ক্যান্ডালাইজ করেছেন? প্রধান বিচারপতি যদি আদালত অবমাননার মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। তাহলে লাখ লাখ মামলার কী হবে।

শুনানির সময় দুই মন্ত্রী প্রায় ৫ মিনিট আদালতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন দুই মন্ত্রীর আইনজীবীদের অনুরোধে আদালতের অনুমতি নিয়ে তাদেরকে বসতে বলা হয়। ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মোজাম্মেল হকের বসার অনুমতি চান। পরে প্রধান বিচারপতি বসার অনুমতি দিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বাসেত মজুমদার বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো মন্তব্য করবো না বলে অঙ্গীকার করছি এবং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছি। প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের প্রতি আমার সম্মান আছে। আবেদনকারী একজন মুক্তিযোদ্ধা। আবেগ প্রবণ হয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, সংসদে ও টকশোতে রাজনীতিবিদরা আমাদের শুনানি নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। দু’জন মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন সে ব্যাপারে টেলিফোনে কথা হয়েছে। আমি (আইন) মন্ত্রীকে বলেছি কেবিনেটে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করতে। একইসঙ্গে আমি দেশে ফেরার আগে দুই মন্ত্রীকে প্রেস কনফারেন্স করে ক্ষমা চাইতে বলেছি।

প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, শুনেছি প্রধানমন্ত্রী দুই মন্ত্রীকে বকাঝকা দিয়েছে। এ বকা ঝকায় কিছু হবে না। পরের দিন ক্ষমা না চাইলে পরিণতি সাঙ্গাতিক খারাপ। বিমান বন্দর থেকে আমি বাসায় না গিয়ে সরাসরি কোর্টে আসি। এর পরের দিন গুরুত্বপূর্ণ রায় দেব। এর আগে এর চুল পরিমাণ বরখেলাপ হবে না। নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলেছি।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "বিচার বিভাগকে পিষ্ট করেছেন দুই মন্ত্রী : প্রধান বিচারপতি"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*