নিউজ ডেস্ক : যারা ধর্মের নামে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে হত্যা-সন্ত্রাসে লিপ্ত হচ্ছে, তাদের সুপথে ফেরার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের জীবন-জীবিকার জন্য সরকার সব কিছু করবে। সেই সঙ্গে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু-কিশোর সমাবেশে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে, এটা চলবে এবং কঠোর হাতে তা আমরা দমন করব। ” রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী যখন এই বক্তব্য রাখছেন, তখনও সিলেটে একটি জঙ্গি আস্তানা ঘিরে অভিযান চলছে।
গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে চলা এই অভিযানের মধ্যেই শনিবার রাতে পর পর দুটি বিস্ফোরণে দুই পুলিশ সদস্যসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন র্যাবের একজন কর্মকর্তাসহ দুজন। এর আগে গত ১০ দিনের মধ্যে ঢাকায় র্যাবের একটি স্থাপনায় আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে, বিমানবন্দর পুলিশ বক্সের কাছে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছে এক বোমা বহনকারী।
জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজ যারা বিপথে যাচ্ছে; আমি তাদের আহ্বান করব; এই বিপথ ছেড়ে তারা যেন সৎ পথে ফিরে আসে। তাদের জীবন-জীবিকার জন্য যা প্রয়োজন, আমাদের সরকার তা করবে। কিন্তু এভাবে আত্মহননের পথ তারা যেন বেছে না নেয়, জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসের পথ যেন বেছে না নেয়। ”
শিক্ষার্থীরা যাতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়, সেদিকে আরও বেশি নজর দেওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”আমরা চাই, আমাদের শিশুরা মন দিয়ে লেখাপড়া করবে। অভিভাবকদের কথা শুনবে, শিক্ষকদের কথা শুনবে। আর মাদক বা কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে না। ” ধর্মের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে সাধারণ নাগরিকদের জঙ্গিবাদে জড়ানো হচ্ছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে।
স্টেডিয়ামে উপস্থিত বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, “একটা কথা মনে রাখবে- ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম সৌহার্দ্যর ধর্ম, ইসলাম ভ্রাতৃত্বর ধর্ম। ইসলামে কখনো মানুষ হত্যার কথা বলে নাই। বরং ইসলাম ধর্ম বলেছে আত্মঘাতী হওয়া বা আত্মহনন মহাপাপ; এটা গুনার কাজ। যারা আত্মহনন করে, তারা কখনো জান্নাতে যায় না, জাহান্নামে যায়। তারা কখনো বেহেশতে যেতে পারে না। ”
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশের অগ্রযাত্রাকে কেউ যাতে বাধাগ্রস্ত করতে না পারে- সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।
অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সকলের প্রচেষ্টায় আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন উন্নত জীবন পায়, সৎ চরিত্রের হয়, মানুষের মতো মানুষ হয়। … আজকের প্রজন্মই আগামী দিনে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। ”
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি যেমন প্রধানমন্ত্রী হয়েছি; আজকে যারা শিশু, আগামী দিনে তাদের মধ্যে থেকেই কেউ না-কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে। ” সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি ‘সুন্দর বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
Be the first to comment on "‘বিপথগামীরা সুপথে ফিরলে সহায়তা করবে সরকার’"