সালাউদ্দিন রাজন, লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় মধুমতি নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসত-ভিটা, স্থাপনা, এবং শতশত বিঘা আবাদী জমি, গাছপালা, রাস্তাঘাট ও বিদ্যুতের খুটি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কয়েকশ’ পরিবার।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের মানুষেরা একাধিকবার মধুমতি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর মধুমতী নদীর শিয়রবর এলাকায় ভাঙ্গন রোধে জিও ব্যাগ ফেললেও তা এ বছর কাজে আসছেনা।
রামকান্তপুর গ্রামের আফজাল, আলাউদ্দিন, বালাম, সাদ্দাম, চুন্নুমিয়া, হুমায়ুন কবির, আরফিন, ওসমান মুন্সীসহ অনেকেই জানান, মধুমতি নদীর ভাঙনে তাদের বসতবাড়ি বার বার নদীগর্ভে চলে গেছে। একাধিকবার ভাঙনের কবলে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। প্রতিবছরের মত এ বছরও যেভাবে নদী ভাঙ্গছে তাতে করে আবারও আমাদের বসতভিটা কখন যেন নদীর পেটে চলে যায়, এই চিন্তায় রাতে ঘুম আসেনা। এবার বাড়ি ভাঙ্গলে মাথাগোঁজার ঠাঁই আর থাকবে না।
রামকান্তপুর গ্রামের তোতা মিয়া জানান, ইতিপূর্বে ‘তাদের ৫ বিঘা জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। এ পর্যন্ত তিন বার ভাঙ্গনের শিকার হয়েছেন তিনি। এবারও ভাঙ্গনের মুখে রয়েছেন।
আরফিন মোল্যা জানান, বসতভিটা ছাড়াও তাদের আবাদি জমি, সুপারী বাগান, পুকুরসহ ভাঙ্গনে প্রায় ৭ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন বৃদ্ধ বয়সে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন তিনি। সেটিও ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে। এরপর স্ত্রী সন্তান নিয়ে কোথায় থাকবেন সে ঠিকানাও নেই বলতেই কেঁদে ফেলেন ওই বৃদ্ধ। বালাম মোল্লার স্ত্রী তহমিনা জানান, আগে দুইবার তাদের বসত ভিটা নদীগর্ভে চলে গেছে। বারবার ভাঙনের কবলে পড়ে তারাও নিঃস্ব হয়ে কোন রকমন অন্যের জমিতে ঘর তুলে জীবন যাপন করছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আশিকুল আলম জানান, মধুমতী নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদি জমি,
মাদ্রাসা, মসজিদ ভাঙনের শিকার হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে নদী গর্ভে পুরো এলাকা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি মধুমতি নদীর ভাঙন রোধে জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফী বিন মোর্তজাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষেয়ে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘লোহাগড়া উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের ভাঙনরোধে কোন বরাদ্দ নেই, এ কারণে কোনো ধরণের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।
Be the first to comment on "মধুমতি নদীর ভাঙনে দিশেহারা লোহাগড়ার শতাধিক পরিবার"