শিরোনাম

রুটিন অস্ত্রোপচারের দৃষ্টান্ত ঢামেক হাসপাতালে

নিউজ ডেস্ক: নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টার পরেও নিউরো সার্জারি, ইএনটি ও অর্থোপেডিকস বিভাগের রোগীদের জন্য রুটিন অস্ত্রোপচার চালু করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের চিকিৎসকরা। আগে এ বিভাগগুলোতে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত (শুধুমাত্র অফিস চলাকালীন সময়ের ছয়ঘণ্টা) রোগীদের রুটিন অস্ত্রোপচার হতো। বর্তমানে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ১২ ঘণ্টা রুটিন অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে।

জানা গেছে, রুটিন অস্ত্রোপচারের জন্য শত শত রোগীদের সিরিয়াল পেতে দুই-তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। তবে এখন দুই এক সপ্তাহের মধ্যে অস্ত্রোপচার করে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তারা। এ জন্য চিকিৎসকরা বাড়তি কোনো আর্থিক প্রণোদনাও নিচ্ছেন না। শুধুমাত্র রোগীদের স্বার্থে স্বপ্রণোদিত হয়ে চিকিৎসকরা গত ১ মে থেকে এ রুটিন অস্ত্রোপচার করেছেন।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মিজানুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রোগীদের স্বার্থে চিকিৎসকদের এভাবে এগিয়ে আসার ঘটনা সত্যিই প্রশংসনীয়।

তিনি বলেন, সাধারণত এ তিনটি বিভাগে রোগীদের চাপ অনেক বেশি। জরুরি অস্ত্রোপচার ছাড়া রুটিন অস্ত্রোপচারের জন্য রোগীদের দুই থেকে তিনমাস পর্যন্ত অপেক্ষা করার ঘটনাটি নজরে আসে। পরে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানসহ অন্যান্যদের সঙ্গে এ সমস্যা সমাধানের আলোচনা করা হয়।

আলোচনার এক পর্যায়ে চিকিৎসকরা স্বপ্রণোদিত হয়ে রুটিন অপারেশন থিয়েটার (ওটি) রাত ৮টা পর্যন্ত চালু রাখতে রাজি হন। তবে তারা শর্ত দেন যে অজ্ঞানকারী (অ্যানেসথেসিওলজিস্ট) চিকিৎসক, সহযোগী নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

চাহিদার তুলনায় অপ্রতুলতা থাকলেও চিকিৎসকদের দাবি অনুযায়ী অ্যানেসথেসিওলজিস্ট, নার্স ও ওয়ার্ড বয়দের উপস্থিতির বিষয়টি নিশ্চিত করলে রুটিন ওটি চালু হয়। এর ফলে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে উল্লেখ করে ডা. মিজানুর রহমান বলেন, এখন আর রোগীদের দীর্ঘদিন অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। অপেক্ষার সময় দুই-তৃতীয়াংশ কমে এসেছে এবং ওটির সংখ্যাও অর্ধেকের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

জানা যায়, গত একমাসে নিউরো সার্জারিতে মোট ১৬৯টি, ইএনটি ৮৭ ও অর্থোপেডিকর্সে ১০৩ জন রোগীর অস্ত্রোপচার হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ঢামেক হাসপাতালে মোট ৩৫টি ওটি রয়েছে। এর মধ্যে ৩১টিতে জেনারেল অ্যানেসথেসিয়া (জিএ) মেশিন ব্যবহার করে অস্ত্রোাপচার করা যায়। এছাড়া ৩৫টির মধ্যে ক্যাজুলেটির ২টি, সিজার ২টি, নিউরো সার্জারি ১টি, ইউরোলাজি ১টা, ইর্মাজেন্সি ক্যাজুয়েলটি ১টি ও পেডিয়েট্রিক ১টিসহ ৮টি জরুরি ওটিতে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা রোগীর অস্ত্রোপচার করা হয়।

এ বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক জানান, এ তিনটি রুটিন ওটি চালুর আগে ঢামেক হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে ১৭৫টি অপারেশন হতো। বর্তমানে সে সংখ্যা আরো বেড়েছে।

ইএনটি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. দেবেশ চন্দ্র তালুকদার বলেন, রোগীদের কষ্টের কথা ভেবেই চিকিৎসকরা এগিয়ে এসেছেন। চিকিৎসকরা যে অতিরিক্ত সময় পরিশ্রম করছেন সে জন্য সরকারিভাবে কোনো প্রণোদনা দেয়া গেলে চিকিৎসকরা কাজের প্রতি আরো বেশি মনোযোগী হতেন।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "রুটিন অস্ত্রোপচারের দৃষ্টান্ত ঢামেক হাসপাতালে"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*