নিউজ ডেস্ক : প্রত্যাশিত রানের মধ্যে বেঁধে ফেলা গেল না শ্রীলঙ্কাকে। চান্দিমালের সেঞ্চুরির পর লেজের দাপটে অনেকটা পথ এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ৩০০ রানের মধ্যে লঙ্কানদের বেঁধে ফেলা। এ জন্য যত দ্রুত সম্ভব দ্বিতীয় দিন সকালেই বাকি ৩ উইকেট তুলে নেওয়ার দরকার ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু দিনেশ চান্দিমালের দৃঢ়তায় এবং লোয়ার অর্ডারদের টিকে থাকার লড়াইয়ের মাঝে ৩০০ পার করল স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় দিন সকালেও দারুণ বল করা বাংলাদেশের বোলিং লাইনাআপ হঠাৎ করেই যেন নির্বিষ হয়ে গেল। জুটি গড়ার সুযোগ পেল লঙ্কা। শেষ পর্যন্ত ৩৩৮ রানে থামে রঙ্গনা হেরাথের দল।
পি সারা ওভালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক শততম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে উইকেট তুলে নেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান তার ঘূর্ণি বলটি মারতে গিয়ে স্লিপে দুরূহ ক্যাচ দেন হেরাথ। কিন্তু সেরা ফিল্ডারের তকমা পাওয়া সৌম্য সরকার অসাধারণ দক্ষতায় ক্যাচটি তালুবন্দি করেন। অষ্টম উইকেটের পতন হয় শ্রীলঙ্কার। সাকিবের ঝুলিতে ওঠে দ্বিতীয় উইকেট। দিনেশ চান্দিমাল এবং রঙ্গনা হেরাথ অষ্টম উইকেটে ৫৫ রানের জুটি গড়েন। যা দলের জন্য ভীষণ জরুরি ছিল। সাকিবের বলে আউট হওয়ার আগে ৯১ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২৫ রান করেন লঙ্কান দলনেতা।
এরপর প্রচণ্ড চাপের মুখে দাঁড়িয়ে কলম্বো টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালেই সেঞ্চুরি তুলে নিলেন লঙ্কান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান দিনেশ চান্দিমাল। এটা তার ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরি। ২৪৪ বল খেলে মাত্র ৬টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তিনি এই শতক করেন। ব্যাট হাতে যখন তিনি উদযাপন করছেন তখন ২৬১ রানে ৮ উইকেট হারিয়েছে তার দল। তাইজুল ইসলামের বলে ১ রান নিয়ে তিনি এই মাইলফলকে পৌঁছান। তার এই ইনিংসটি ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া শ্রীলঙ্কার জন্য ভীষণ জরুরি ছিল। অন্যদিকে প্রথম দিন থেকেই টাইগার বোলারদের লক্ষ্য ছিল চান্দিমাল। এর আগে ৮৬ রান করে প্রথম দিন শেষ করেছিলেন তিনি।
সাকিব আল হাসানকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলের রান ৩০০ পূরণ করেন চান্দিমাল। সুরাঙ্গা লাকমলের সঙ্গে তার ৯ম উইকেট জুটিতে এসে গেছে ৫৫ রান! শেষ পর্যন্ত ৩০০ বলে ১০ চার এবং ১ ছক্কায় ১৩৮ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। মিরাজের বলে দারুণ ক্যাচ নেন অভিষিক্ত মোসাদ্দেক হোসেন।
এরপর দেখা যায় লেজের দাপট। দুই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান লাকমল আর সান্দাকান মিলে স্কোর বড় করার লক্ষ্যে মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন। বাংলাদেশি বোলাররা হঠাৎ যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলে। ঝড়ো গতিতে রান এগিয়ে যেতে থাকে লঙ্কানদের। ছক্কা মারতে গিয়ে সৌম্যর তালুবন্দী হওয়ার আগে লাকমল ৪৫ বলে ৩৫ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। দশম উইকেট জুটিতে আসে ৩৩ রান! লাকমলকে আউট করে লেজের এই দাপট থামিয়ে দেন শুভাশিস রায়।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে মেহেদী হাসান মিরাজ সর্বাধিক ৩ উইকেট নেন। ২১ ওভার বল করে ৯০ রান দিয়ে সবচেয়ে খরুচে বোলারও তিনি। ২টি করে উইকেট নেন দুই পেসার মুস্তাফিজ-শুভাশিস আর অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ১ উইকেট নিতে সক্ষম হন তাইজুল ইসলাম। তরুণ মোসাদ্দেক ৪ ওভার বল করে ১১ রান দিয়ে কোনো উইকেট নিতে পারেননি।
Be the first to comment on "লাঞ্চের আগেই অল-আউট হলো শ্রীলঙ্কা"