রাশেদ জামান, লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি ॥ নড়াইলের লোহাগড়ায় দাঙ্গা কবলিত গন্ডব গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় চাচা-ভাতিজাসহ ৩ জন খুন হয়েছে। এ সময় হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। আহতদের লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নড়াইল সদর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা হলেন গন্ডব গ্রামের মৃত মাজেদ মোল্যার ছেলে মোক্তার মোল্যা (৫৮) মোন্তাজ মোল্যার ছেলে আমিনুর রহমান হাবিল মোল্যা (৫০), এবং চালিঘাট গ্রামের সাইফার মোল্যার ছেলে রফিকুল মোল্যা (৩৪)। বর্তমানে ওই গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দাঙ্গা কবলিত গন্ডব গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিরাজ মোল্যা ও শরিফুল মোল্যা সমর্থিত লোকজনদের সাথে একই গ্রামের ছলেমান মেম্বর সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে বুধবার (১০জুন) সকালে মিরাজ মোল্যা সমর্থিত ওই গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তার মোল্যার ছেলে ও খুলনা পর্যটক পুলিশের এসআই ওসমান গনি (৪০) কে ছলেমান মেম্বর সমর্থিত লোকজন মাদ্রাসার সামনে হামলা চালিয়ে গুরুত্বর আহত করে। স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে যশোর সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে। এলাকায় পুলিশ থাকা অবস্থায় হেলমেট পরিহিত একদল অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা রামদা ,ছ্যানদাসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অর্তকিতভাবে হামলা চালিয়ে মিরাজ মোল্যা সমর্থিত লোকজনদের উপর হামলা চালায়। হামলায় ঘটনাস্থলে আমিনুর রহমান হাবিল নিহত হয়। গুরুত্বর আহত মোক্তার মোল্যাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যায়। আহত রফিকুলকে নড়াইল সদর হাসপাতাল থেকে যশোর নেওয়ার পথে মারা যায় । এ ছাড়া গুরুতর আহত নজরুল মোল্যা, মিজান মোল্যা, জুয়েল মোল্যা, সাইফুল ,খবির মোল্যা, নজির মোল্যা,ইকরাম শেখ, সৈয়দ সাব্বির , তানভীন, সুইট,সুগার,ওসমান, কিবরিয়া, সোহাগ মোল্যা,সুরুজ মোল্যা, ইনতাজ, আজাদ বিশ্বাস, লাকী বেগম, মাজেদা খানমকে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নড়াইল সদর ও খুলনা মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান জানান, বুধবার গন্ডব গ্রামে দ্বন্ধ-সংঘাতের বিষয়ে শান্তি বৈঠকের কথা ছিল। এ কারনে সকাল থেকেই ওই গ্রামে পুলিশ মোতায়েন ছিল। এর মধ্যে ছলেমান মেম্বর পক্ষিয় লোকজন প্রতিপক্ষের একজনের উপর হামলা চালায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে মিরাজ মোল্যার পক্ষের তিনজন নিহত হয়েছে এবং অনেকেই আহত হয়েছে। খবর পেয়ে নড়াইলের পুলিশ সুপার জসিমউদ্দীন পিপিএম (বার) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় ট্রিপল মার্ডার,আটক ১০"