নিউজ ডেস্ক : তামাকজাত পণ্যে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের অবস্থান এখন সারাবিশ্বে ৫৭তম। ২০১৪ সালে প্রকাশিত ৪র্থ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১০তম।
কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটি সারা বিশ্বে তামাকপণ্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানের অবস্থা নিয়ে তাদের ৫ম প্রতিবেদনে সূচকে বাংলাদেশের এই সাফল্যের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে । বাংলাদেশে তামাকপণ্যে স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বাধ্যতামূলক করার এক বছর পূর্ণ হয়েছে শনিবার ১৯ মার্চ। ২০১৬ সালের এদিন থেকে সকল তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটার উপরিভাগের ৫০ শতাংশ জায়গাজুড়ে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট ক্ষতি সম্পর্কিত রঙ্গিন ছবি ও লেখা সম্বলিত স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বাধ্যতামূলক করা হয় ।
কানাডিয়ান ক্যান্সার সোসাইটির ‘ সিগেরেট প্যাকেজ হেলথ ওয়ারনিং : ইন্টার ন্যাশনাল স্টেটাস রিপোর্ট -২০১৬ ’ নামে এই প্রতিবেদনে ২০৫টি দেশের তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যেখানে ১৫২টি দেশ তামাকপণ্যের মোড়কে স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা প্রদান করছে। এরমধ্যে বাংলাদেশসহ ১০৫টি দেশ তামাকপণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বাধ্যতামূলক করেছে।
প্রতিবেদনে যৌথভাবে প্রথমস্থানে রয়েছে নেপাল এবং ভানুয়াতু। এই দুইটি দেশ তামাকপণ্যের মোড়কের উভয় পার্শ্বের ৯০ শতাংশ জায়গাজুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী চালু করেছে। ৮৫ শতাংশ জায়গাজুড়ে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী মুদ্রণ বাধ্যতামূলক করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত এবং থাইল্যান্ড। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান এগিয়ে আসলেও দক্ষিণ পূর্ব এশিয় দেশ বিশেষ করে নেপাল, ভারত, থাইল্যান্ড এবং শ্রীলংকা’র তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান আরো পরে ।
তবে সার্বিকভাবে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন নিয়ে তামাক বিরোধী সংগুলোর মিশ্র প্রতিক্রিয়া আছে । সম্প্রতি এক গবেষণা ফলাফলে দেখা গেছে প্রায় ৭৫ শতাংশ তামাকপণ্যের প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নেই।
গবেষনা প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা’র (প্রগতির জন্য জ্ঞান ) নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবাইয়ের বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিধিমালা, ২০১৫ দ্বারা নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখের পর থেকে মোড়ক বা প্যাকেটে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী ব্যতীত কোনো তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় কিংবা বাজারজাত করা আইনত দ-নীয় অপরাধ।
তিনি বলেন, সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী এমন এক কার্যকর পন্থা যা তামাক ব্যবহারের সময় প্রতিবারই ব্যবহারকারীকে তামাকের ক্ষতি সম্পর্কিত বার্তা প্রদান করতে থাকে। তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো মনে করে আইনের সুফল পেতে তামাক কোম্পানিগুলো আইনটি যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা অত্যন্ত জরুরি। সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন পরিস্থিতি
পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে সহায়তা করার লক্ষ্যেই এই গবেষনাটি পরিচালিত হয়েছে বলে জানান তারা ।
গবেষণায় দেশের ৮টি বিভাগীয় শহর যথা ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর এবং ময়মনসিংহে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী বাস্তবায়ন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। এবছরের ২২ জানুয়রিতে প্রকাশিত এ গবেষনায় আরো দেখা গেছে ৫১ভাগ তামাকপণ্যে শতভাগ আইন মেনে সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ করা হয়নি। ৯২দশমিক ৭ ভাগ তামাকপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সচিত্র সতর্কবাণী মুদ্রণ সংক্রান্ত শতভাগ কমপ্লায়েন্স অনুসরণ না করেই তামাকপণ্য বিক্রয় করছে।
এ ছাড়াও ১৯ দশমিক ২ ভাগ তামাকপণ্যের প্যাকেটে/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী নেই। গবেষণায় প্রাপ্ত ৪৪টি ব্রান্ডের সিগারেটের মধ্যে ৩৫টি এবং ১৭টি ব্রান্ডের বিড়ির মধ্যে ১২টি পূর্ববর্তী পর্বের ছবিসহ বাজারে পাওয়া গেছে।
Be the first to comment on "স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানে বৈশ্বিকসূচকে বাংলাদেশের সাফল্য"