নিউজ ডেস্ক : দুর্নীতির অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের মামলায় আপিল শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। এ মামলায় তিনটি আপিল শুনানির জন্য বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
সোমবার (২৭ মার্চ) প্রধান বিচারপতি এ বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।
এখন এই বেঞ্চের কার্যতালিকায় আসলে মামলাটির শুনানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
এর আগে গত ২৩ মার্চ কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে এরশাদের করা আপিলের রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করা হলেও সেদিন রায় ঘোষণা হয়নি। এ মামলায় সাজা বৃদ্ধিতে দুই যুগ আগে রাষ্ট্রপক্ষের দুইটি আপিল আদালতের নজরে আসে। যেহেতু তিনটি আপিলই এ মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত সেক্ষেত্রে এরশাদের করা একটি আপিলের রায় আলাদাভাবে দেওয়া হলে ‘দ্বান্দ্বিক অবস্থা’ তৈরি হতে পারে। এরই প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ তিনটি আপিলের নথি প্রধান বিচারপতির নিকট পাঠিয়ে দেন।
সে অনুযায়ী আজ (সোমবার) প্রধান বিচারপতি শুনানির জন্য বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিলেন।
এই মামলায় গত বছর ৩০ নভেম্বর হাইকোর্টে আপিল শুনানি শুরু হয়, যা শেষ হয় গত ৯ মার্চ। শুনানি শেষে ওইদিনই ২৩ মার্চ রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করেছিলেন আদালত।
আদালতে এরশাদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শেখ সিরাজুল ইসলাম। অপরদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
আদালতের আদেশের পর দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এই মামলার আপিল শুনানিতে দুদক পক্ষভুক্ত হয়েছে ২০১২ সালে। তাই রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের বিষয়ে দুদকের জানা থাকার কথা নয়।’
এরশাদের মামলাগুলো শুনানিতে যে এক ধরনের দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যাচ্ছে, এই মামলার ক্ষেত্রেও কি তেমনটি হয়েছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তেমনটি মনে করি না। কারণ আদালত বলেছেন রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলায় দুটি আপিল করেছে। এখন এরশাদের আপিলের রায় আলাদা করে দেওয়া হলে একটা দ্বান্দ্বিক অবস্থা তৈরি হতে পারে। আর এসব আপিল শুনানিতে যাতে বিলম্ব না হয়, এজন্য উভয়পক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলেছে আদালত। একটু দেরিতে হলেও তিনটি আপিল একসঙ্গে শুনানি করে রায় ঘোষণা হলে আইনগত আর কোনো প্রশ্ন উত্থাপনের সুযোগ থাকবে না।’
রাষ্ট্রপতি থাকাকালে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ রাখার অভিযোগে ১৯৯১ সালের ৮ জানুয়ারি তত্কালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো এরশাদের বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই মামলা দায়ের করে। মামলায় ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬৫ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছিলো।
এই মামলায় ১৯৯১ সালের ২০ মার্চ বিচারিক আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি নিন্ম আদালত ওই মামলায় এরশাদকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়। ওই সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরই আপিল করেন এরশাদ। একই বছর রাষ্ট্রপক্ষ সাজা বৃদ্ধির জন্য দুটি আপিল করে।
এরশাদের করা আপিলটি দুই যুগ ধরে হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই মামলায় পক্ষভুক্ত হয়ে দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানালে গত ৩০ নভেম্বর শুনানি শুরু হয়।
Be the first to comment on "এরশাদের মামলা শুনানিতে বেঞ্চ নির্ধারণ"