শিরোনাম

নির্বাচনী সহিংসতায় তিন জেলায় নিহত ৩

নিউজ ডেস্ক: দ্বিতীয় ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোট বর্জন, সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জ, জামালপুর ও যশোরে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন শতাধিক। তবে নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও বেশিরভাগ কেন্দ্রেই সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে  দেশের ৬৩৯ ইউপিতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে টানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচনে ১৭টি দল অংশ নিলেও মূলত লড়াইটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে।

এছাড়াও বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, বিএনপি ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোট বর্জন, একাধিক কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে আটকের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের জেলা প্রতিনিধি ও নিজস্ব প্রতিবেদকের খবর :

কেরানীগঞ্জ : কেরানীগঞ্জে হযরতপুর ইউনিয়নের মধুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে  শুভ ঘোষ (১০) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, হযরতপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আয়নাল হোসেন ও বিএনপির প্রার্থী নুরুল হক রিপনের সমর্থকদের গোলাগুলির মাঝখানে পড়ে শিশুটি মারা যায়।

কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ জানায়, দুই পক্ষের সমর্থকদের গুলিতে শিশুটি আহত হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

যশোর : যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের ভাতুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দু`পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে বোমাবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক ভাজা বিক্রেতা নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহত ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।

জামালপুর: মেলান্দহ উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের উত্তর বালুরচর কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় রফিকুল ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

তবে পুলিশ সংঘর্ষে নিহত হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। পুলিশ বলছে, সংঘর্ষে নয় বরং ওই ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

কুমিল্লা: জেলার বরুড়ায় আধ্রা ইউপির পেরপেটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের বাইরে নৌকার প্রার্থী মঞ্জুর হোসেনের বাড়ি থেকে ২৫টি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার বড় ছেলে হাছান জামিলসহ ১৬ জনকে আটক করে পুলিশ।

এদিকে, একই উপজেলার ৩ নং খোশবাস ইউপির আরিফপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

টাঙ্গাইল : গোপালপুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান জসীম নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারার অভিযোগ তিনি নির্বাচন বর্জন করেন।

চাঁদপুর : হাইমচরে ভৈরবী আজিজিয়া মাদরাসা কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার কে এম মান্নাতকে মারধর করে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের অভিযোগে ওই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে ১৭টি দল চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৫০৭ জন প্রার্থী দিয়েছে। আর স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন ১ হাজার ১৭৭ জন প্রার্থী। এ নির্বাচনে ভোটার রয়েছেন ৯৪ লাখ ৭৮ হাজার ৮১ জন। চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত সদস্য এই তিন পদের বিপরীতে ভোটার সংখ্যার তিনগুণ ব্যালট ছাপিয়েছে ইসি।

সূত্র জানায়, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় দফার ইউপি নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী ৬৮৪টি ইউপির ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও নির্বাচন হচ্ছে ৬৩৯টিতে। মূলত মামলা ও সীমানা জটিতলতার কারণে অন্য ইউপিগুলোতে ভোট হচ্ছে না।

দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোট শুরুর আগেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ৩১ জন প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। আর ৮১টি ইউপিতে বিএনপির কোনো প্রার্থী নেই। বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী নেই ৪৮৭টি ইউপিতে।

উল্লেখ্য, প্রথম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে পিরোজপুর, কক্সবাজার, নেত্রকোনা ও ঝালকাঠি জেলাসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ১১ জন নিহত হন।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "নির্বাচনী সহিংসতায় তিন জেলায় নিহত ৩"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*