শিরোনাম

প্রেগনেন্সি নিয়ে যে ১০টি ভুল ধারণা রয়েছে

নিউজ ডেস্ক: কথায় কথায় অনেক কিছুই রটে তার কতটা সত্যি এবং কতটা ভুল ধারণা? প্রেগনেন্সি নিয়ে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে মানুষের মনে। চিকিৎসাবিজ্ঞান যেগুলিকে বলে মিথ।
জেনে নিন, সুস্থ থাকুন

প্রেগনেন্সি বা গর্ভধারণ নিয়ে যে কোনও মানুষের ধারণা অনেকটাই তৈরি হয় পরিবারের সদস্যদের বা বন্ধুবান্ধবদের কথা শুনে। হিউম্যান রিপ্রোডাকশন পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত হলেও গর্ভধারণের সময়ে কী কী হয় না হয় সেই নিয়ে সম্যক ধারণা অনেকেরই নেই। আর সেই থেকেই নানা রকম ভুল ধারণা তৈরি হয়—

১) গর্ভবতী মহিলারা যৌন সঙ্গম করলে গর্ভপাতের আশঙ্কা থাকে বলে অনেকের ধারণা। এটা সম্পূর্ণভাবে অর্ধসত্য। কিছু সেক্স পজিশন রয়েছে যেগুলি এই সময়ে বিপজ্জনক। গর্ভাশয়ে কোনও রকম চাপ না দিয়ে মিশনারি পজিশনে সঙ্গম করলে তা বিপজ্জনক নয়।

২) শিশু জন্মানোর আগে তার জন্য জামাকাপড় বা জিনিসপত্র কেনা অশুভ বলে মনে করেন অনেকে। এতে নাকি অশুভ আত্মারা ভর করে এবং গর্ভপাতও হয়ে যেতে পারে। মা-ঠাকুমারা জন্মের আগে জামাকাপড় কিনতে বারণ করেন সম্পূর্ণ অন্য কারণে। কোনও কারণে যদি সত্যিই অঘটন ঘটে তবে সন্তান হারানো মায়ের উপর অত্যন্ত মানসিক চাপ পড়ে। তাই বারণ করা হয়, কোনও অশুভ আত্মার খেলা নেই এখানে।

৩) গর্ভবতী অবস্থায় দড়ি জাতীয় কিছু মাড়াতে বারণ করা হয়। প্রচলিত ধারণা, এর ফলে নাকি আমবিলিকাল কর্ড পেঁচিয়ে যেতে পারে গর্ভস্থ সন্তানের গলায় এবং মৃত্যুও হতে পারে। এই ধারণার কোনও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।

৪) গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা জানার জন্য বহু লক্ষণ দেখার বিষয় প্রচলিত রয়েছে এদেশে যার মধ্যে অধিকাংশই ভুল। যেমন বলা হয় যে মেয়ে হলে গর্ভবতী মাকে দেখতে খারাপ লাগে এবং ছেলে হলে তার উলটো। পুরোটাই গল্পকথা। মর্নিং সিকনেসের ফলে প্রথম তিনমাসে মেয়েদের শরীরের উপরে অনেক ঝড়-ঝাপ্টা যায়। তারই প্রভাব পড়ে চেহারায়। গর্ভে ছেলেই থাকুক বা মেয়ে, বিষয়টা একই দাঁড়ায়।

৫) বাংলার খুব প্রচলিত ধারণা গর্ভাবস্থায় জোড়া কলা খেলে যমজ সন্তান জন্মাবে। ভুল ধারণা বললে কম বলা হবে। একে বলা উচিত হাস্যকর ধারণা।
৬) গ্রহণের সময় খাওয়া উচিত নয় বলে যে ধারণাটি রয়েছে তা গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রেও ধরা হয়। পুরুষ-নারী, গর্ভবতী হোক বা না হোক খাওয়া-দাওয়ার উপরে গ্রহণের কোনও প্রভাব নেই। গর্ভাবস্থায় ঠিক সময়ে খাওয়া-দাওয়া করা জরুরি। এই কুসংস্কারের ফলে ঠিকমতো না খেলে বরং উলটো ফল হবে।

৭) গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করা উচিত নয় বলে অনেকের ধারণা যা আদ্যন্ত ভুল। এই সময়ে কিছু বিশেষ হালকা ব্যায়াম করা উচিত। এমনকী সাঁতারও কাটা যায়। তবে কী করবেন, কতটা করবেন সেই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৮) গর্ভবতী মহিলাদের অনেক বাড়িতেই খাসির মাংস বা সামুদ্রিক মাছ খেতে দেওয়া হয় না। প্রথমটি প্রোটিনসমৃদ্ধ এবং দ্বিতীয়টিতে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। দু’টিই গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে যাওয়া খুব প্রয়োজনীয়। কাজেই এই ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে আসুন।

৯) ৩ মাস হওয়ার আগে গর্ভধারণের খবর বাইরের লোককে জানালে তাদের কুনজর লেগে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হয় বলে একটি ধারণা রয়েছে। এটি কুসংস্কার কোনও সন্দেহ নেই। বরং অন্য একটি কারণে খবরটি খুব বেশি লোককে না দেওয়া উচিত। প্রথম ৩ মাস খুব ক্রিটিকাল। এই সময়েই বেশিরভাগ মিসক্যারেজ হয়। গর্ভধারণের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার পরে যদি তেমন কিছু ঘটে তবে স্বাভাবিকভাবেই তা মেয়েদের মনের উপর চাপ সৃষ্টি করে। কারণ বেশিরভাগ মানুষেরই কমন সেন্স নেই। এই রকম ঘটনার পরে মেয়েদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে তাঁদের মানসিক যন্ত্রণাকেই বাড়িয়ে দেন তাঁরা। সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে ৩ মাস পরে অবস্থা স্থিতিশীল হলে তবেই খবর দেওয়া ভাল।

১০) পৃথিবীর অনেক দেশেই মানুষের ধারণা যে গর্ভবতী মহিলারা কোনও কুৎসিত পশু বা কুৎসিত দৃশ্য দেখলে শিশুকেও দেখতে কুৎসিত হয়। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কথা।

basic-bank

Be the first to comment on "প্রেগনেন্সি নিয়ে যে ১০টি ভুল ধারণা রয়েছে"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*