রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত,নড়াইলের বীর মুক্তিযোদ্ধা‘মুন্সী কাওসার’

নিউজ ডেস্ক ॥ নড়াইলের কালিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুন্সী লাল মিয়ার ছোট ভাই খুলনার দিঘলিয়া উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সভাপতি ও পুলিশ কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী কাওসার হোসেন আর নেই । মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে তার নিজ বাসভবন খুলনার সেনহাটি  গ্রামে বার্ধক্য জনিত কারনে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন । (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন) । মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর । বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে প্রায় সহস্রাধিক লোক জানাযায় অংশগ্রহণ করে । এ সময় দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল আলম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার মো: মাহবুবুল আলম, দিঘলিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রিপন কুমার, উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল’র নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাক্তি, শিক্ষাবিদ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ধর্মপ্রাণ মানুষজন অংশগ্রহণ করেন । উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল আলমের নেতৃত্বে দিঘলিয়া থানা পুলিশের একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করেন । সন্ধ্যা ৬ টায় নিজ বাড়ির অদুরে তার প্রতিষ্ঠিত মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয় । মৃত্যুকালে তিনি দুই পুত্র, তিন কন্যা সন্তানসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন । তিনি কালিয়া উপজেলার টোনা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম ও মুন্সী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা, মুন্সী পাড়া জামে মসজিদের প্রতিষ্টাতা ও সারোয়ার খান ডিগ্রী কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সদস্য ছিলেন ।
চাকুরী সুবাদে তিনি স্বাধীনতা পূর্ব থেকে খুলনা দিঘলিয়া উপজেলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন । পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন । দেশ স্বাধীন করে পুনরায় তিনি পুলিশ বাহিনীতে ফিরে যান । তিনি যুদ্ধকালীন সময় ৮ ও ৯ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ পরিচালনা করে পুলিশের গেজেট প্রাপ্ত হন ২৫৪ । দক্ষতার সাথে তিনি পুলিশ বাহিনীতে চাকুরী করে রিজার্ভ ইন্সপেক্টর (আর আই) পদে উন্নীত হয়ে অবসর গ্রহন করেন । এই বীরমুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতা পরবর্তীকালে স্থানীয় জনপদে নানা সংকটে মানুষের পাশে দাড়িয়েছিলেন । ধর্ম প্রাণ মানুষের জন্য তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন মুন্সিপাড়া জামে মসজিদ ও নবেজান কিরাতুল কুরআন মাদ্রাসা, ঈদগাহ ও ইসলামী পাঠাগারসহ অনেক প্রতিষ্ঠান । দিঘলিয়ার ঐতিহ্যবাহী যাকারিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকালে সাধারণ সম্পাদকের দায়ীত্ব পালন করেছেন । তিনি দিঘলিয়া উপজেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়ীত্ব পালন করেন । আলহাজ্ব সারোয়ার খান কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে তিনি ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন । দিঘলিয়া উপজেলার প্রাচীন শিশুশালা আসমা সারোয়ার শিশু একাডেমির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । এছাড়া তিনি তার মাতৃভূমি নড়াইলের টোনা গ্রামে পিতার নামে মুন্সী মানিক মিয়া ডিগ্রি কলেজ ও ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ।