নিউজ ডেস্ক ॥ নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের বিরোধপূর্ণ চরদৌলতপুর গ্রাম। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতা ও তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে দীর্ঘদিন ধরে ঘটে চলেছে রক্তক্ষয়ী সংঘর্য। হামলা-হামলায় জর্জরীত ওই গ্রামের প্রায় অধিকাংশ মানুষ। নড়াইলের আদালতে দুটি পক্ষের ৩৩টি মামলায় আসামী ৫৯৭ জন। এই গ্রামের ৮৯ জনের নামে থানায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। রাতে পুলিশের ভয়ে ঘুমাতে হয় কোন আত্মীয়ের বাড়ি অথবা বাগানে। ২০০৯ সাল থেকে চলে আসা বিরোধ গত ৫ বছর সংঘাতে রুপ নেয়। দু’পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় ছানোয়ার মোল্যা স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ববরণ করেছে। উভয় পক্ষের অসংখ্য মানুষ শরীরে একাধিক হাড় কাটা আঘাত ও রগ কাটা চিহ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, এই গ্রামে মারামারি করে অন্তত ২০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাদের সন্তানদের পড়াশোনাও চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে। এই গ্রামের বিরোধ নিরসনের বিষয়টি নড়াইলের পুলিশ সুপার উদ্যোগ নেয়। সম্পৃতির বন্ধন তৈরির লক্ষে দু’পক্ষের মাতব্বরদের সাথে আলোচনার এক পর্যায়ে গত শনিবার (২মার্চ) সকাল ১০টায় স্থানীয় স্বরসতি একাডেমী মাঠে উভয়পক্ষের লোকজন নিয়ে বসেন মীমাংসার জন্য। এতে ইতনা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সনু’র পরিচালনায় সভাপতিত্ব করেন, লোহাগড়া উপজেলা আ’লীগের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট দৌলত আহম্মেদ খান। সম্পৃতির বন্ধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন (পিপিএম), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরফুদ্দিন, উপজেলা আ’ লীগের সভাপতি শিকদার আব্দুল হান্নান রুনু, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী, ইতনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান টগর, সাবেক চেয়ারম্যান শিকদার মুনির আহম্মেদ মন্টু, শেখ মনিরুজ্জামান, শেখ শিহানুক রহমান, ইতনা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ আহাদুজ্জামান, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রকাশ কুমার বিশ্বাস ও বিভিন্ন গনমাধ্যমকর্মীসহ অনেকে। আলোচনা শেষে বিরোধ নিরোসনে উভয় পক্ষ একমত পোষন করলে পুলিশ সুপার তাদের হাতে হাত ও কাধে কাধ মিলিয়ে একসাথে দুপুরের খাবার টেবিলে বসেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, নড়াইল জেলায় বদলী হওয়ার পর শুনেছি এই জেলায় গ্রাম্য কোন্দলের পরিমান খুব বেশি। আমি অনেক এলাকার বিরোধ মীমাংসা করেছি। আশা করি চর-দৌলতপুর গ্রাম বাসীর দীর্ঘদিনের বিরোধ নিরসনের মধ্যদিয়ে তারা আগামী দিনে শাপিূর্ণভাবে বসবাস করবে। এরপর কোন পক্ষ বিশৃঙ্খলা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে। নড়াইলের সব এলাকার মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে সে ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় দশ বছরের গ্রাম্য বিরোধের অবসান"