লোহাগড়ায় বন্ধুমহলের স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠন

লোহাগড়ায় বন্ধুমহলের স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠন

নিউজ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৮ লাখ ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন হয়। এর ৯০ শতাংশই পাওয়া যায় স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের মাধ্যমে৷ পেশাদার রক্তদাতাদের দৌরাত্ম অনেকটাই কমে এসেছে৷ আগামী ৪-৫ বছর পর পেশাদার রক্তদাতা আর থাকবে না৷দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট ব্লাড ব্যাংকে কয়েক বছর আগেও আইন শৃংখলা বাহিনীর বড় বড় অভিযানের খবর পাওয়া যেতো৷ উদ্ধার করা হতো মানব শরীরে ব্যবহারের অনুপযোগী ক্ষতিকর রক্ত৷ হাসপাতালগুলোতে গেলেই দেখা মিলত পেশাদার রক্তদাতাদের,যাদের প্রায় সবাই ছিলেন রক্ত দেয়ার অনুপযোগী৷ তাদের বড় একটি অংশই ছিলেন মাদকাসক্ত৷ তখন পেশাদার রক্তদাতাদের মাধ্যমে অনেক জটিল এবং কঠিন রোগ ছড়াতো মানবদেহে৷এখানো যে পেশাদার রক্তদাতা নেই, তা নয়৷ মাঝে মাঝে কথিত ব্লাড ব্যাংকে অভিযানও হয়৷ তবে দৌরাত্ম অনেক কমেছে৷ মানুষ সচেতন হয়েছে৷ চাইলে রক্ত পাওয়া যায় ভিন্ন সংগঠন থেকেও৷ অনলাইনে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের গ্রুপ আছে৷ আর সেখানে রক্তের চাহিদার সাথে ডোনারদের সম্মীলন ঘটিয়ে দেয়া হয় রক্ত৷ ব্লাড ব্যাংকে সংরক্ষিত রক্ত লাগে না৷ সরাসরি ডোনারের কাছ থেকে রক্ত নিয়ে রোগীদের দেয়া হয়৷ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে নিবন্ধিত এরকম সেচ্ছায় রক্তদাতা বিশ লাখের অধিক৷ নিবন্ধনের বাইরেও প্রচুর মানুষ এখন নিয়মিত সেচ্ছায় রক্ত প্রদান করে থাকে৷ এই রক্তদানের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছেন শিক্ষার্থীরা৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বদলে দিয়েছে আগের পরিস্থিতি ৷
রক্তদানের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠছে: নড়াইলের লোহাগড়ায় এমনই একটি সংগঠন যার নেতৃত্বে রয়েছে বন্ধুমহল স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠনের দুই ব্লাড ম্যানেজ এ্যাডমিন এনামুল হক সবুজ ও মামুন ফকির। তাদের সংগঠনে প্রায় পাঁচ শতাধিক কর্মী রয়েছে। যারা দিন রাত ২৪ ঘন্টা স্বেচ্ছশ্রমের মাধ্যমে মুমূর্ষ রোগীর কাছে রক্ত পৌছে দিচ্ছে। এই সংগঠনের পেইজে একটি স্ট্যাটাস দিলেই পৌছে যান কাংখিত রক্ত প্রদানকারি। বিরল কোনো গ্রুপের রক্ত হলেও ফেরায় না এই সংগঠন। রক্ত নেওয়া কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে এই সংগঠনের কাছে রক্ত চেয়ে তাদের নিরাশ হতে হয়নি৷ফোন অথবা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) পেইজে একটি স্ট্যাটাস দিলেই যথেষ্ট।
বন্ধুমহল স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠনের ব্লাড ম্যানেজ এ্যাডমিন গ্রুপের দুই কর্ণধার এনামুল হক সবুজ ( এ+) ও মামুন ফকির (ও+)। বন্ধুমহল স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠনের যাত্রা ১ বছর হলেও ইতিমধ্যে ৩৩০ ব্যাগ রক্ত দিয়ে মুমূর্ষু রোগীদের পাশে দাড়িয়েছে। এই সংগঠনটি তাদের কাজের জন্য সর্বদা বদ্ধপরিকর। যে কোন সময় যেকোন রোগীর যেকোন রক্তের প্রয়োজন হলে বন্ধুমহল স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠনটির রক্তযোদ্ধারা সর্বদা পাশে দাড়ায়। মুমূর্ষু রোগীদের রক্তদানসহ রক্ত সরবরাহ করার ক্ষেত্রে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এ্যাডমিন এনামুল হক সবুজ,যোগাযোগের মোবাইল নম্বর ০১৯১১৭৬৬৬১৬ ও মামুন ফকির ০১৯৮৬২৭২৪৭৪। সংগঠনের প্রতিকুলতা দুরীকরোনে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতার আহব্বান জানান।
লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ১৮ বছর থেকে ৫৫ বছর বয়সি যে-কোনো সুস্থ মানুষ প্রতি চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারেন৷ তবে অবশ্যই তাকে নিরোগের অধিকারী হতে হবে ৷ কিছু বিশেষ রোগ না থাকলেই হবে৷ আর স্বেচ্ছায় রক্তদাতারাই আসলে ভালো রক্তের উৎস৷

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "লোহাগড়ায় বন্ধুমহলের স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠন"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*