নিজস্ব প্রতিবেদক : শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরণ করছে জাতি। বুধবার ১১৭তম জন্মবাষির্কীর সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কবির সমাধিতে ছিল মানুষের ঢল। সকাল পৌনে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপার্চায অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ছাত্রী-ছাত্রীরা প্রেমের কবি, দ্রোহের কবি নজরুলে কবরে অর্পণ করেন শ্রদ্ধার ফুল।
এরপর একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় কবি পরিবার, বাংলা একাডেমি, নজরুল একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সমাধি প্রাঙ্গণে উপাচার্যের সভাপতিত্বে স্মরণ সভা হয়।
উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “নজরুলের সাহিত্যকর্ম সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছে। তাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে সমাজের সব সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। আমাদের সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ করে এগিয়ে যেতে হবে। এটা জাতীয় কবির স্বপ্ন ছিল।” কবির নাতনি মিষ্টি কাজী বলেন, “শুধু একদিন দাদুকে স্মরণ করলে হবে না, সারা বছর তাকে স্মরণ করা প্রয়োজন।”
এর আগে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে থেকে উপাচার্যের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হয়, যা শেষ হয় কবির সমাধি প্রাঙ্গণে।
পরে সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ কেন্দ্র (সিআইআইডি) এবং বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আরও একটি শোভাযাত্রা হয়।
১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নজরুল ইসলাম। চরম দারিদ্র্যসহ বহু বাধা অতিক্রম করে একসময় তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা হয়ে ওঠেন। সাম্য ও মানবতার চেতনায় সমৃদ্ধ ছিল তার লেখনী। কবিতায় বিদ্রোহী সুরের জন্য তার পরিচিতি বিদ্রোহী কবি। নজরুল জন্মজয়ন্তীতে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে। কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
এ বছর জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে চট্টগ্রামে, এম এ আজিজ আউটার স্টেডিয়ামে। ওই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি হামিদের অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত বিরূপ আবহাওয়ার কারণে তার যাওয়া হয়নি।
সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, শিল্পকলা একাডেমিও নজরুলজয়ন্তী উদ্যাপন করছে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে। গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠান।
স্বাধীনতার পর অসুস্থ অবস্থায় কবিকে ভারত থেকে সরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশে আনা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় কবি নজরুল ইসলামের।
শ্রদ্ধা-ভালবাসায় নজরুল স্মরণ

Be the first to comment on "শ্রদ্ধা-ভালবাসায় নজরুল স্মরণ"