নিউজ ডেস্ক : সিলেটের কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। চাপাতি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের বর্বর হামলার বর্ণনা দিতে খাদিজা সকাল পৌনে ১১টার দিকে আদালতে পৌঁছান। আসামি বদরুলকে তার আগেই কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয়।
সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে রোববার খাদিজার সাক্ষ্য ও জেরার মধ্য দিয়ে আলোচিত এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়।
আদালতের অতিরিক্ত পিপি মাহফুজুর রহমান জানান, আগামী ১ মার্চ যুক্তিতর্কের জন্য দিন রাখা হয়েছে। এরপর রায় ঘোষণার তারিখ ঠিক করা হবে।
এ পর্যন্ত এই মামলায় ৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে খাদিজাসহ ৩৪ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন হলো।
রবিবার সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। এ সময় খাদিজার সঙ্গে ছিলেন পিতা মাসুক মিয়া, চাচা কুদ্দুস মিয়া, মামা আব্দুল বাছিত ও ফুফু আখতারুন্নেছা। একটি নোহা গাড়িতে করে খাদিজাকে আদালতে নিয়ে আসেন তার পরিবারের লোকজন।
এর আগেও খাদিজাকে সাক্ষী দেয়ার জন্য আদালতে তলব করা হলেও চিকিৎসকের ছাড়পত্র না পাওয়ায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি।
গত ২৯ নভেম্বর এই মামলার একমাত্র আসামি বদরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এর আগে ৮ নভেম্বর শাহপরাণ থানার এসআই হারুনুর রশিদ আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরবর্তীতে ১৫ নভেম্বর শুনানি শেষে আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
গত ৫ অক্টোবর বদরুলকে আদালতে হাজির করা হলে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়। ওইদিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বদরুল চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘আমার ফাঁসি হোক। খাদিজার জয় হোক।’
গত বছরের ৩ অক্টোবর এমসি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার পর হামলার শিকার হন স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস। শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে খাদিজাকে। বর্বর হামলার ভিডিও আকারে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়লে দেশে বিদেশে তোলপাড় শুর হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে খাদিজাকে সিলেটের ওসমানী হাসপাতাল এবং পরবর্তীতে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরবর্তীতে পুনর্বাসনের জন্য সাভারের সিআরপিতে পাঠানো হয় খাদিজাকে। প্রায় ৫ মাস চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলে গত শুক্রবার সিলেটের গ্রামের বাড়ি ফিরেন খাদিজা।
অপরদিকে, খাদিজার ওপর বর্বর হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা বদরুল গ্রেফতারের পর আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেয়। বদরুল বর্তমানে কারাবন্দি রয়েছে।
Be the first to comment on "খাদিজার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন"