রাজন,লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি: উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ভূমির কর-খাজনার চেয়ে ঘুষ দিতে হয় কয়েকগুন বেশি। এমন ঘুষ বাণিজ্যে নাকাল হয়ে পড়েছেন সেবা গ্রহিতারা। বর্তমানে শত অনিয়ম, ঘুষ বাণিজ্য আর হয়রানির আখড়ায় পরিণত হয়েছে এই ইউনিয়নসহ দিঘলিয়া ইউনিয়ন ভূমি পরিসেবায়।
সূত্রে জানা গেছে, মল্লিকপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অর্ন্তগত ৮৬ নম্বর কুন্দসী মৌজায় স্থিত জমি বিক্রয়ের জন্য ১৩৩৭ খতিয়ানে বাংলা ১৪৩১ সনের খাজনা পরিশোধ করে দাখিলা সংগ্রহের জন্য একই গ্রামের মৃত দশরত বিশ্বাসের ছেলে স্বপন বিশ্বাস তার ভাগ্নে তুষার বিশ্বাসকে ভূমি অফিসে পাঠায়। ইউনিয়ন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: উজির আলী তার চাহিত টাকা না পেয়ে সংশ্লিষ্ঠ কাগজপত্র তার টেবিল থেকে ছুড়ে ফেলে তুষারকে বলেন খাজনার কাগজ নিতে হলে এক হাজার টাকা দিতে হবে। তুষার বিশ্বাস বিষয়টি লক্ষীপাশা সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিল লেখক ফরিদ মৃধাকে জানালে তিনি নায়েব উজির আলীকে ফোন করে দাখিলা প্রদানের অনুরোধ করলেও তিনি সাফ জানিয়ে দেন দাখিলা নিতে একহাজার টাকা লাগবে। পরে উপায়ান্তু না পেয়ে তুষার বিশ্বাস নায়েব উজির আলীকে এক হাজার টাকা ঘুষ প্রদান করে ৭৩ টাকার একটি দাখিলা সংগ্রহ করেন।
খোজ খবর নিয়ে আরও জানা যায়, নায়েব উজির আলী একই সাথে কুন্দসী ও দিঘলিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দায়ীত্বে নিয়োজিত রয়েছেন। উভয় ইউনিয়নের ভূমি পরিসেবায় অনুরূপ ভাবে টাকা ছাড়া তিনি কোন কাজ করেন না। প্রকাশ্যে টাকা নিয়ে কাজ করে থাকেন। অর্ন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর যেন তার দৌরাত্ম আরও কয়েকগুন বেড়ে গেছে। দেখার যেমন কেহ নাই, তদরুপ নেই কোন জবাব দিহিতা। জমির রেকর্ড সংশোধন (নামজারী) প্রতিটি নামজারী থেকে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত গ্রহন করে তবেই তিনি প্রতিবেদন দাখিল করে থাকেন।
দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো: ওমর আলী এই প্রতিনিধিকে বলেন, নায়েব উজির আলী টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। ওই ইউপি সদস্য তিনিও নামজারী করতে নায়েবকে টাকা দিয়েছেন বলে আক্ষেপ করেন।
এ ব্যাপারে নায়েব উজির আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি টাকার বিনিময়ে দাখিলা প্রদান ও নামজারীর প্রতিবেদন প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে সাংবাদিককে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করার জন্য স্থানীয় লোকজনের সহায়তা নেন।
লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিঠুন মৈত্র, জানান, বিষয়টি তদন্ত করে নায়েবের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় ৭৩ টাকা খাজনা দিতে হাজার টাকা ঘুষ!"