শিরোনাম

তোমরাই গড়ে তুলবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা

নিউজ ডেস্ক : সাধারণ মানুষ যারা একবেলা পেট ভরে খেতে পারেন না তাদের জন্য বঙ্গবন্ধু সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন। গরিবের প্রতি যে ভালোবাসা, মানুষের প্রতি যে ভালোবাসা তা ছোটবেলা থেকেই ছিল বঙ্গবন্ধুর। আর এ ভালোবাসাই তাকে ধীরে ধীরে জাতির জনকে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৭তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে শিশু-কিশোর সমাবেশে এ মন্তব্য করেন তিনি।

সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে বারবার জেলে যেতে হয়েছে। এ জাতির জন্য একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ সৃষ্টির লক্ষ্য থেকে তিনি সামনে এগিয়ে গেছেন। আর এ লক্ষ্য তার মাঝে ছোটবেলা থেকেই দেখা গেছে। তিনি গায়ের চাদর অন্যদের দিয়ে দিতেন। বই দিয়ে দিতেন। বঙ্গবন্ধু যখন স্কুলে পড়তেন, তখনই তিনি মুষ্টি চাল সংগ্রহ করে, সমিতি করে দুস্থ শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতেন।

‘আমার দাদি বলতেন, আমার খোকার জন্য বার বার ছাতা, বই, জুতা কিনতে হতো। কারণ, খোকা এসব দরিদ্র শিক্ষার্থীদের দিয়ে দিকো। বাবা স্কুল থেকে ফেরার পথে অনেক ছাত্রকে নিয়ে আসতেন। এজন্য বাবার জন্য বেশি করে খাবার রাখতেন দাদি। নিজের গোলার ধান নিয়ে গরিব মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিতেন বাবা’- স্মৃতিচারণে বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা অনেক ভাগ্যবান ছিলেন কারণ, তার বাবা-মা জনগণকে সাহার্য করার ব্যাপারে কোনো বাধা দিতেন না।

এর আগে সকাল সোয়া দশটায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যে অশুভ শক্তি একাত্তরে পরাজিত হয়েছিল তারাই পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার আমরা করেছি। তাদের রায় কার্যকর করেছি, দেশ কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। একইসঙ্গে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হচ্ছে। তারা ষড়যন্ত্র করছে, কিন্তু এ ষড়যন্ত্রে কাজ হবে না।

‘জাতির পিতা চেয়েছিলেন, বাংলাদেশ একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হবে, ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হবে। আমাদের কাজ হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করা। আমরা সেই কাজই করে যাচ্ছি’- বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন, এ দেশের প্রতিটি শিশু শিক্ষিত হবে। আমরা সেই চেষ্টা করছি। প্রত্যেকটা শিশুর মাঝে সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে, তা বিকাশের সুযোগ করে দিচ্ছি।

শিশু-কিশোরদের প্রতি মন দিয়ে পড়াশোনা করা, মা-বাবার কথা শোনা, শিক্ষকদের কথা শোনা, বড়দের মান্য করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তোমরা যতোদূর পারো শিক্ষা অর্জন করবে। শিক্ষা হবে তোমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সম্পদ। এ শিক্ষা কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। তোমরা এ শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতে দেশ গড়ে তুলবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, মেধা-জ্ঞানচর্চা,  প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন- সবদিকে তোমাদের মনোনিবেশ করতে হবে।

বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ভাই ছোট্ট শিশু শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত শেখ হাসিনা বলেন, মাত্র ৫৪ বছর বয়সে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। রাসেলকে হত্যা করা হয়েছে দশ বছর বয়সে। আজ তাদের ছবির দিকে তাকিয়ে ভাবি, বাবা বেঁচে থাকলে আজকে দেখতে কেমন হতেন। ছোট্ট রাসেল বেঁচে থাকলে দেখতে কেমন হতো।

জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে এগিয়ে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে আমরা উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবো। শিশু-কিশোররা সোনার বাংলা গড়ার প্রধান শক্তি।

Print Friendly, PDF & Email
basic-bank

Be the first to comment on "তোমরাই গড়ে তুলবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা"

Leave a comment

Your email address will not be published.


*