নিউজ ডেস্ক ॥ নিউ ইয়র্কে নৃশংসভাবে খুন হয়েছে মেধাবী বাংলাদেশি তরুণ ফাহিম সালেহ। ম্যানহাটনের লোয়ার ইস্টসাইডে নিজ এপার্টমেন্ট থেকে তাঁর খন্ড-বিখন্ড মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় রাইডশেয়ারিং কোম্পানি পাঠাও এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। যুক্তরাষ্ট্রের বেন্টলি ইউনিভার্সিটিতে ইনফরমেশন টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করা ফাহিম গত বছর প্রায় ২২ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয়ে ম্যানহাটনে অত্যাধুনিক এই এপার্টমেন্ট কিনেছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি পাঠাও এর মতো দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া এবং আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় আরও দু’টি রাইড শেয়ারিং কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) তরফ থেকে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ৯১১ নম্বরের এক টেলিফোন কলের মাধ্যমে পুলিশ প্রথম এই হত্যাকান্ডের কথা জানতে পারে। এরপর এনওয়াইপিডি’র প্রিসিঙ্ক্ট ০০৭ (পুলিশ স্টেশন বা থানা) থেকে পুলিশ সদস্যরা ২৬৫ ইস্ট হাউস্টন স্ট্রিটে (সাফোক স্ট্রিটের কর্ণারে) ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। অত্যাধুনিক ওই কন্ডোমেনিয়াম ভবনের সপ্তম তলায় ফাহিমের এপার্টমেন্ট।
সেখানে ঢুকেই পুলিশ দেখতে পায় যে, ড্রয়িং রুমের মেঝেতে একটি মস্তকবিহীন দেহ পড়ে আছে। এমনকি হাত এবং পাগুলোও শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন। মৃতদেহের পাশেই পড়েছিল একটি ইলেক্ট্রিক করাত। এছাড়া কয়েকটি প্লাস্টিক ব্যাগে ফাহিমের খন্ড-বিখন্ড দেহের কয়েকটি অংশ পাওয়া যায়।
এনওয়াইপিডি’র বাংলাদেশি-অ্যামেরিকান কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর মানবজমিনকে বলেন, নিহত ফাহিম সালেহ’র কাজিন (খালাতো বোন) পরিচয়ে জনৈকা মীরান চৌধুরী প্রথম ৯১১ নম্বরে কল করে পুলিশকে এই হত্যাকান্ডের খবর দেন। এর আগে সোমবার বিকালের পর থেকে তিনি বেশ কয়েক দফায় ফাহিমের নম্বরে ফোন করেও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে মঙ্গলবার দুপুরের পর সরাসরি তার এপার্টমেন্টে চলে যান। তারপরই তিনি পুলিশকে ফোন করেন।
এদিকে এনওয়াইপিডির অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ওই কন্ডোমেনিয়াম ভবনের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে, ফাহিম গত সোমবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটের সময় সর্বশেষ তার এপার্টমেন্টে প্রবেশ করেন। এ সময় সপ্তম তলায় যাওয়ার জন্য তিনি যখন নিচতলা থেকে এলিভেটর বা লিফটে চড়েন তখন আরও এক ব্যক্তি লিফটে উঠেন। ফাহিম সন্দেহের দৃষ্টিতে অচেনা ওই লোকটির দিকে তাকিয়েছেন বলেও ভিডিওতে দেখা গেছে। এরপর সে ফাহিমের সঙ্গেই সপ্তম তলায় নেমে পড়েন এবং ফাহিম তার এপার্টমেন্টের দরজা খোলা মাত্রই লোকটি তার ওপর আক্রমণ চালায় এবং ধাক্কা দিয়ে তাকে এপার্টমেন্টের ভেতরে ঢুকিয়ে ফেলে।
পুলিশ বলছে, প্রথমিকভাবে সবকিছু দেখেশুনে মনে হচ্ছে, হত্যকারী একজন পেশাদার খুনি। ফাহিমের মৃতদেহটি ইলেক্ট্রিক করাত দিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করা হলেও মেঝেতে কোনো রক্তের দাগ ছিল না।
Be the first to comment on "নিউ ইয়র্কে যেভাবে খুন হন পাঠাও’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম"