নিউজ ডেস্ক॥ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করবে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও এর জোট। দলটির নেত্রী জেলে থাকা সত্ত্বেও তারা এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। বিএনপি সহ বিরোধী দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা নিয়ে বিদেশী মিডিয়ার খবরে এমনই বলা হয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ নিয়ে এ খবরই বিদেশি মিডিয়ায় প্রাধান্য পেয়েছে। তাতে বার্তা সংস্থা এএফপি লিখেছে, এর আগে ২০১৪ সালের নির্বাচনে জালিয়াতি হওয়ার আশঙ্কায় নির্বাচন বর্জন করেছে বিরোধী দল বিএনপি। এতে ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনার সরকার। তবে বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন এএফপিকে বলেছেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছি যে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন আগামী ২৩শে ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। সোমবার (১২নভেম্বর) সকালে আগামী ৩০ডিসেম্বর নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষনা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশন (সিইসি)। কিন্তু ওই নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিএনপি। তারা বলেছে, এই নির্বাচন গণতান্ত্রিক হবে না। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করার ঘোষণাও দিয়েছে তারা। দলটির নেত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দি। তবে তার দল ও সমর্থকরা বলছেন, নেত্রীকে কারাবন্দি করা হয়েছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। কার্যত ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার সামনে তার শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করার কোনো সময় নেই। এর ফলে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ সুনিশ্চিতভাবেই বন্ধ হতে পারে। বিরোধী দল বলছে, সাম্প্রতিক দমনপীড়নে বিএনপির প্রায় ৫০০০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। নির্বাচন ও আন্দোলন করার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে এসব নেতাকর্মীর প্রয়োজন। এএফপি আরো লিখেছে, অধিকার কর্মী, ছাত্র নেতারা ও একজন শীর্ষ স্থানীয় ফটোসাংবাদিক সহ ভিন্ন মতাবলম্বীদের গ্রেপ্তার ভোটের ওপর একটি ছায়া ফেলেছে। বিরোধীরা বলছে, খালেদা জিয়া ও তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পূর্বপরিকল্পিত ও ইচ্ছাকৃত। বার্তা সংস্থা কিয়োদো লিখেছে, রোববার রাজধানী ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলন করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর একটি জোট। তারা তাতে ঘোষণা দিয়েছে, আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এই বিরোধী জোট গঠন করা হবে প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে কেন্দ্রে রেখে। এই দলটি নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির আশঙ্কায় ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল। আগামী ৩০শে ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকেই সবার দৃষ্টি ছিল বিএনপির দিকে যে, তারা নির্বাচনে অংশ নিবে কিনা! দলটির প্রধান খালেদা জিয়াকে ফেব্রুয়ারিতে দুর্নীতির অভিযোগে জেল দেয়া হয়েছে। তবে বিরোধী দলীয় জোট দাবি করছে, তার বিরুদ্ধে শাস্তি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তাই তারা অবিলম্বে ও নির্বাচনের আগে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিতে আহ্বান জানিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। একই সঙ্গে বিরোধী দলীয় এই জোট ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন এক মাস পিছানোর দাবি তুলেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সিরিজ দাবি প্রত্যাখ্যান করার পরও ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা করেছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর জোট। ১৯৭৮ সালের পর থেকে বাংলাদেশে যে দুটি বড় রাজনৈতিক দল রয়েছে তার মধ্যে বিএনপি অন্যতম। তারা ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গঠন করা হয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর নেতৃত্বে আছেন ৮১ বছর বয়সী রাজনীতিক ও বিশিষ্ট আইনজীবি ড. কামাল হোসেন। এই জোট নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে। বিএনপি বলছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রয়োজন। তা নাহলে আওয়ামী লীগ সরকারি রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করবে তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় সমর্থন পেতে। তবে ওই দাবিকে অসাংবিধানিক বলে অভিহিত করেছে আওয়ামী লীগ। এর আগের নির্বাচন ভয়াবহ সহিংসতার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এবং নির্বাচনকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করেন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করবে বিরোধী জোট

Be the first to comment on "প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চ্যালেঞ্জ করবে বিরোধী জোট"