নিউজ ডেস্ক ॥ নড়াইলের লোহাগড়া পৌর শহরের ১নং জয়পুর ওয়ার্ডে অবস্থিত অনুমোদনহীন বে-সরকারি বিসমিল্লাহ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক ও অদক্ষ নার্সদের অবহেলায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাতে তৃষ্ণা বিশ্মাস (২৫) নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল মালিকপক্ষ প্রায় দেড় লক্ষ টাকায় পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা করেছে বলে জানা গেছে। প্রসূতির মৃত্যু হলেও নবজাতকটি সূস্থ্য রয়েছে। বিসমিল্লাহ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক একলাছুর রহমান,তৃষ্ণা বিশ্মাসের পরিবারের সঙ্গে প্রায় দেড় লক্ষ টাকায় সমঝোতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তৃষ্ণার পরিবারের লোকজন জানান, উপজেলার জয়পুর গ্রামের সুব্রত বিশ্মাসের অন্তসত্ত্বা স্ত্রী তৃষ্ণা বিশ্মাসকে ১৫জুন সন্ধা ৭টার দিকে বিসমিল্লাহ হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জিক্যাল চিকিৎসক মোঃ তাজরুল ইসলাম (বিসিএস স্বাস্থ্য) ও লোহাগড়া সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক অবেদনবিদ (অ্যানেসথেটিস্ট) সুব্রত কুমার (বিসিএস স্বাস্থ্য) সমন্ময়ে তৃষ্ণার অস্ত্রোপচার করেন। এরপর একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। প্রসূতি ও নবজাতক উভয় সুস্থ ছিলেন। সার্বক্ষনিক চিকিৎসক ও দক্ষ নার্স না থাকায় রাত ১০ টার দিকে তৃষ্ণা হঠাৎ অসূস্থ হয়ে পড়ে। সংবাদ পেয়ে চিকিৎসক তাজরুল ইসলাম ছুটে আসেন হাসপাতালে। চিকিৎসা প্রদানের প্রাক্কালে রাত ১২টার দিকে তৃষ্ণা বিশ্মাস মারা যান। শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে লোহাগড়ার পরশমনি শশ্মান ঘাটে তার শেষ কৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন এবং ওই হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সরকারের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে অনুমোদনহীন ভাবে সিভিল সার্জনের নাম ভাঙ্গিয়ে দির্ঘ্য দিন ধরে নামে মাত্র হাসপাতাল খুলে নির্বিগ্নে প্রতারনা ব্যাবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে কোনো অবেদনবিদ ও নিজস্ব কোনো চিকিৎসক নেই। নেই তেমন কোন চিকিৎসা সরঞ্জাম, প্রশিক্ষন প্রাপ্ত নার্স, টেকনিশিয়ান। বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে চিকিৎসক এবং ধরে এনে নার্স বানিয়ে রোগীদের অস্ত্রোপচার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়।
চিকিৎসক মোঃ তাজরুল ইসলাম বলেন, সফলভাবে প্রসূতির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রসূতি ও নবজাতক দুজনই সূস্থ্য ছিলেন, এবং তার পরিবার পরিজনের সাথে কথাও বলেছেন। প্রসূতির বমিজনিত কারনে শ্মাসনালী বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাসপাতাল মালিক একলাছুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে যথার্থ নিয়মেই চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। সরকারের নিয়ম নীতির মধ্যেই ব্যাবসা পরিচালনা করে আসছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদনের জন্য সিভিল সার্জন বরাবর আবেদন করেছেন তিনি।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ওই হাসপাতালটি পুলিশ পরিদর্শন করেছে। প্রসূতির পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় লাশের ময়না তদন্ত করা হয় নাই ।
Be the first to comment on "লোহাগড়ায় অনুমোদনহীন ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যু ! টাকায় সমঝোতা"